বিশ্বজুড়ে সাইবার হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৯৯টি দেশ আক্রান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন সাইবার নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা। এ তালিকায় বাংলাদেশের থাকারও ঝুঁকি রয়েছে। এই হামলা ঘটানো হয়েছে ‘র্যানসমওয়্যার’
দিয়ে।
র্যানসমওয়্যার
হচ্ছে পরিচিত ম্যালওয়্যার বা ক্ষতিকর কম্পিউটার প্রোগ্রাম। যা কম্পিউটার বা মুঠোফোন ব্যবহারে বাধা দিয়ে থাকে। এটি একধরনের র্যানসম বা মুক্তিপণ দাবি করার মতো ব্যাপার। হ্যাকাররা কম্পিউটার বা মুঠোফোনের মতো যন্ত্রে এই প্রোগ্রাম ঢুকিয়ে দেয় এবং একবার সফলভাবে এটি ঢুকে পড়লে আপনার যন্ত্রের নিয়ন্ত্রণ ওই প্রোগ্রাম অর্থাৎ নেপথ্যে থাকা হ্যাকারের হাতে চলে যাবে। এমন কাজ করে তা থেকে মুক্তিপণও দাবি করে হ্যাকাররা।
কয়েক ধরনের র্যানসমওয়্যার আছে,
এর সব কটিই বেশির ভাগ কম্পিউটার বা মুঠোফোনের ব্যবহারে বাধা দেবে। ব্যবহৃত ফাইলকে এনক্রিপটেড করবে,
যেকোনো ধরনের সফটওয়্যার ব্যবহার বিশেষ করে ওয়েব ব্রাউজার ব্যবহারে বাধা দেয় র্যানসমওয়্যার।
র্যানসমওয়্যারের হাত থেকে বাঁচতে
উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের নির্মাতা মাইক্রোসফট তাদের এক ব্লগে র্যানসমওয়্যার থেকে মুক্তি পাওয়ার কিছু পদ্ধতি বলে দিয়েছে।
যে ব্যবস্থাগুলো নেওয়া জরুরি
ভালো মানের হালনাগাদ করা অ্যান্টি-ভাইরাস ইনস্টল করতে হেব। ই-মেইল বা ওয়েবসাইটে পাওয়া যেকোনো লিঙ্ক বা অ্যাটাচমেন্ট দেখা মাত্রই ক্লিক করা থেকে বিরত থাকুন। ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারের স্মার্টস্ক্রিন চালু রাখুন।
ওয়েবসাইট দেখার সফটওয়্যারের (ব্রাউজার)
পপ-আপ ব্লকার চালু রাখতে হবে। দরকারি ফাইলগুলোর আরেকটি কপি (ব্যাকআপ)
নিয়মিত রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আপনি চাইলেই দরকারি ফাইলগুলোকে ক্লাউড স্টোরেজে রাখতে পারেন। এ ক্ষেত্রে মাইক্রোসফটের ওয়ান ড্রাইভ বা গুগলের গুগল ড্রাইভে রাখা যেতে পারে।
ডেটা ফিরে পেতে
কম্পিউটারের তথ্য বা ডেটা ফিরে পাওয়াটা নির্ভর করে কোথায় আপনার ফাইল রেখেছিলেন এবং উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের কোন সংস্করণ ব্যবহার করছেন,
তার ওপর। মাইক্রোসফট বলছে ফাইল ফেরত (রিকভার)
পাওয়ার আগে ‘উইন্ডোজ ডিফেন্ডার অফলাইন’
ব্যবহার করে কম্পিউটারকে স্ক্যান করে নিন। মাইক্রোসফটের ওয়ান ড্রাইভ সেবাটি ব্যবহার করে মাইক্রোসফট অফিসের কোনো ফাইল সেভ বা তাতে কোনো পরিবর্তন আনলে নিরাপত্তার খাতিরে সেটির একটি ব্যাকআপ কপি তৈরি করে অনলাইনে সিঙ্ক করে রাখে। ওয়ানড্রাইভের অনলাইনে গিয়ে কাঙ্ক্ষিত ফাইলে মাউসের ডান ক্লিক করে Version
history
থেকে তার সর্বশেষ সংরক্ষণ করা কপি ফিরে পাওয়া যাবে। উইন্ডোজ ১০-এ আগে থেকেই ওয়ান দেওয়া থাকে।
অন্যান্য ফাইল ফিরে পেতে
উইন্ডোজ ৮.১ বা ১০ সংস্করণের জন্য ফাইল হিস্ট্রি অন রাখতে হবে। এ জন্য উইন্ডোজের স্টার্ট মেনুতে গিয়ে Settings
লিখুন। সেটিংস খুঁজে পেলে তাতে ক্লিক করে খুলুন। সেটিংস উইন্ডো থেকে Update
&
security-এ ক্লিক করুন। উইন্ডোজের আপডেট এবং সিকিউরিটির বাঁয়ের Backup
মেনুতে ক্লিক করুন। এখানে Automatically back up my files
এর নিচের অন বাটনে ক্লিক করে সেটিকে চালু করে দিন। এই বাটন না দেখালে ব্যাকআপের জন্য ড্রাইভার চালু করতে হবে।
অনেক র্যানসমওয়্যারই ব্যাকআপ নেওয়া বা এনক্রিপ্ট করা
ফাইলকে মুছে ফেলে। এ ক্ষেত্রে বহনযোগ্য হার্ডডিস্ক ড্রাইভ বা পেনড্রাইভ
কাজে দেবে।
র্যানসমওয়্যার মুছে ফেলবেন যেভাবে
র্যানসমওয়্যার মুছে ফেলাটা অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করে। ব্রাউজার চালু থাকলে সেটিকে আগে বন্ধ করুন। এরপর ভালো মানের হালনাগাদ (আপডেটেড)
অ্যান্টি-ভাইরাস দিয়ে পুরো কম্পিউটার স্ক্যান করে নিন। কম্পিউটার স্ক্যানের কাজটি উইন্ডোজকে সেফ মোডে নিয়ে করলে সবচেয়ে ভালো হয়। ব্রাউজার বন্ধ করতে উইন্ডোজ টাস্ক ম্যানেজার খুলতে হবে আগে। টাস্কবারে ডান ক্লিক করে Task
Manager
খুলুন (Ctrl+Shift+Esc)। টাস্ক ম্যানেজারের তালিকায় থাকা Applications
বা Processes থেকে ওয়েব ব্রাউজার খুঁজে নিন। এতে ক্লিক করে End task
চাপুন। রেসপন্সের কোনো বার্তা দেখালে Close the
program-এ ক্লিক করে বন্ধ করে দিন। পরে আবার ব্রাউজার খুললে restore your
session অপশন এলে সেটিকে প্রত্যাখ্যান (ডিক্লাইন) করুন।
No comments:
Post a Comment