ক্যান্সারের চিকিৎসায় ম্যাসটেকটোমি বা স্তন কেটে ফেলা কতোটা জরুরি !

বিআরসিএ বা ব্র্যাকা নামের একটি জিন আছে সবার শরীরেই। কিন্তু এই জিনের কোনো একটিতে যখন ত্রুটি দেখা দেয়, তখন সেটা ডিএনএর ক্ষতি করতে পারে এবং তার জের ধরে শরীরের কোষে ক্যান্সার দেখা দিতে পারে।

যুক্তরাজ্যে স্তন ক্যান্সারের যতো রোগী আছে, তাদের প্রায় পাঁচ শতাংশের শরীরেই আছে এই ব্র্যাকার ত্রুটিপূর্ণ জিন। এই জিনটিকে নির্মূল করতেই অপারেশনের মাধ্যমে স্তন কেটে ফেলে দেওয়া হয়, চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় যাকে বলা হয় ম্যাসটেকটোমি।
ব্রিটেনে সাউদাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ত্রুটিপূর্ণ ব্র্যাকা জিন আছে স্তন ক্যান্সারের যেসব রোগীর শরীরে তাদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনাও, যাদের শরীরে এই ত্রুটি নেই, তাদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনার সমান।
প্রায় তিন হাজার রোগীর উপর এই গবেষণাটি চালিয়ে তারা বলছেন, রেডিওথেরাপি কিম্বা ম্যাসটেকটোমি- যে ধরনের চিকিৎসাই তারা নিয়ে থাকুক না কেনো, ফলাফল একই রকমের।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর অর্থ হলো স্তন কেটে ফেলে দেওয়ার মতো বড়ো রকমের এক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে অল্প বয়সী নারীরা আসলে একটু সময় নিতে পারেন।
বিআরসিএ বা ব্র্যাকার দুটো জিন আছে- ব্র্যাকা এক এবং ব্র্যাকা দুই। চিকিৎসকরা বলছেন, এই জিনের রূপান্তরের ফলে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি চার থেকে আটগুণ বেড়ে যায়। যেসব নারীর উপর এই গবেষণাটি চালানো হয়েছে তাদের ১২ শতাংশের ক্ষেত্রেই দেখা গেছে যে তাদের শরীরে ব্র্যাকার রূপান্তর ঘটে সেখানে ত্রুটি দেখা দিয়েছিলো।
গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব রোগীর শরীরে ব্র্যাকা ত্রুটি ছিলো এবং যাদের ছিলো না তারাও প্রায় একই সময়কাল পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন।
তবে গবেষকরা বলছেন, নতুন করে দীর্ঘ মেয়াদী সময়ে যাতে ক্যান্সার হতে না পারে সেজন্যে রোগীদের শরীরে এই ম্যাসটেকটোমি উপকারী হতে পারে।

অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি তার স্তন কেটে ফেলে দিয়েছেন ক্যান্সারের ঝুঁকি থেকে নিজেকে রক্ষা করতে  
ছবির কপিরাইট Reuters
Image caption অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি তার স্তন কেটে ফেলে দিয়েছেন ক্যান্সারের ঝুঁকি থেকে নিজেকে রক্ষা করতে
এই ব্র্যাকা জিনটির একটি সুপরিচিত নাম- অ্যাঞ্জেলিনা জোলি জিন। হলিউডের এই অভিনেত্রী যখন জানতে পারেন যে তার স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৮৭ শতাংশ তখনই তিনি অপারেশন করে স্তন কেটে ফেলে দেন। তারপর থেকেই এই জিনটি এই নামে পরিচিত হয়ে উঠে।
স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধের একটি উপায় ম্যাস্টেকটোমি বা অপারেশন করে স্তন কেটে ফেলা। তবে এই গবেষণায় ক্যান্সার হওয়ার আগেই স্তন কেটে ফেলে দেওয়ার বিষয়ে নজর দেওয়া হয়নি।
এই ম্যাস্টেকটোমি নিয়ে শুনুন বাংলাদেশে শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেডিওলজি ও ইমেজিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শাহনাজ চৌধুরীর সাক্ষাৎকার। অডিওটি শুনতে হলে উপরের লিঙ্কে ক্লিক করুন।
স্তন ক্যান্সার ছাড়াও ত্রুটিপূর্ণ বিআরসিএর কারণে ওভারিয়ান ও প্রোস্টেট ক্যান্সারও হতে পারে।
BBC- bangla.

No comments:

Post a Comment