বীর্যহীনতার কারণ !

 বিশ্বের তাবড় চিকিত্‍সা বিজ্ঞানীরা কয়েকটি কারণ চিহ্নিত করেছেন। এই কারণগুলির জন্যই পুরুষ বীর্যহীনতার শিকার হয়ে থাকেন।
কারণগুলি নিয়ে একটু আলোচনা করা যাক। এবং এই ধরনের কোনও শারীরিক সমস্যা হলেই চিকিত্‍সকের পরামর্শ নেওয়া দরকার বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।

মাম্পস :- বয়ঃসন্ধির পরে যদি মাম্পস হয়, তাহলে অবিলম্বে চিকিত্‍সকের দ্বারস্থ হওয়া উচিত। কারণ বিজ্ঞানীরা বলছেন, বয়ঃসন্ধির সময় বা পরে মাম্পস, পুরুষের অণ্ডকোষে শুক্রাণু উত্‍পাদনকারী কোষগুলি নষ্ট করে দিতে পারে। ফলে কোনও পুরুষ আজীবন বীর্যহীনতার শিকার হতে পারেন।
ভ্যারাইকোসেল :- চিকিত্‍সা বিজ্ঞনীরা জানাচ্ছেন, ভ্যারাইকোসেল হল শুক্রনালীর শিরাঘটিত একপ্রকার টিউমার। এই ধরনের টিউমার হলে, যে শিরার মাধ্যমে অণ্ডকোষে রক্ত সঞ্চালিত হয়, সেই শিরা ফুলে যায়। ফলে অণ্ডকোষে রক্ত সঞ্চালন ঠিকমতো হয় না। এবং শুক্রাণু তৈরিও হওয়া কমে যায়। দেখা গিয়েছে, ভ্যারাইকোসেলের সম্পূর্ণ চিকিত্‍সার পরেও মাত্র এক চতুর্থাংশ ব্যক্তির শুক্রাণু তৈরি সন্তোষজনক ভাবে বেড়েছে।

আনডিসেন্ডেড টেস্টিকল্‌স :- অর্থাত্‍ অণ্ডকোষ অণ্ডথলিতে না গিয়ে, অ্যাবডমেনেই থেকে যাওয়া। পুত্র সন্তানের জন্মের আগে মাতৃগর্ভেই তৈরি হয়ে যায় অণ্ডকোষ। এরপর ঠিক জন্মের কয়েক দিন আগে দু'টি অণ্ডকোষ অ্যাবডমেন থেকে অণ্ডকোষ থলিতে নেমে আসে। মাতৃগর্ভে যখন এই প্রক্রিয়াটি ঠিকমতো হয় না, তখনই আনডিসেন্ডেড টেস্টিকল্স-এর সমস্যা তৈরি হয়। চিকিত্‍সার পরিভাষায় যাকে বলে ক্রিপটরচিডিজম। এর জেরে একজন পুরুষকে সারা জীবন বীর্যহীনতায় ভুগতে হতে পারে।

টেস্টিকিউলার ক্যান্সার :- অণ্ডকোষে ব্যথা অনুভব করলে অবিলম্বে চিকিত্‍সকের দ্বারস্থ হওয়া অত্যন্ত জরুরি। কারণ অনেক সময় অণ্ডকোষে টিউমার হলে এক ধরনের ব্যথা হয়। এই ব্যথাকে অগ্রাহ্য করলে বিপদ। ওই টিউমার থেকে ক্যান্সার হতে পারে। ঠিক সময়ে ধরা না-পড়লে ক্যান্সার ছড়িয়ে যায় দেহের অন্যান্য অংশেও। ফলে মৃত্যুও হতে পারে।

ডায়াবেটিস :- ডায়াবেটিস আক্রান্ত হলেও শুক্রাণু তৈরি কমে যেতে পারে। চিকিত্‍সকরা জানাচ্ছেন, ডায়াবেটিস রোগীদের অনেক ক্ষেত্রেই শুক্রাণু তৈরি কমতে শুরু করে। এক সময় তৈরি হওয়া একেবারে বন্ধ হয়ে যাওয়ারও আশঙ্কা থাকে।

অস্ত্রোপচার বা কোনও ক্ষত :- কোনও দুর্ঘটনায় অণ্ডকোষে গুরুতর আঘাত লাগলে বা কোনও ক্ষত হলে শুক্রাণু তৈরিতে প্রভাব পড়ে। খেলতে গিয়ে অণ্ডকোষে আঘাত পেলে বা কোনও দুর্ঘটনায় আহত হলে অণ্ডকোষগুলিতে রক্ত সঞ্চালন কমে যেতে পারে। এমনকি হারনিয়া অস্ত্রোপচারের ফলেও বীর্যহীনতা হতে পারে।

শারীরির ভারসাম্যহীনতা :-
সঙ্গমের সময় অনেক পুরুষের যৌনাঙ্গ থেকে নির্গত ধাতুতে শুক্রাণু থাকে না। অনেক সময় মূত্রনালীতে সংক্রমণ হলে এই ধরনের সমস্যা হয়। এর ফলে শুক্রাণুর সঙ্গে অন্যান্য তরলের মিশ্রণ না হওয়ায় বীর্য তৈরি হয় না।

তপ্ত আবহাওয়া বা পরিবেশ :- শুক্রাণু তৈরিতে তাপমাত্রা একটা বড় ভূমিকা নেয়। দেখা গিয়েছে, যে সব ব্যক্তি দিনের পর দিন খুব গরমের মধ্যে কাজ করেন (কারখানা, বয়লার রুম ইত্যাদি), তাঁদের শুক্রাণু তৈরি কমে যায়।

প্রচণ্ড মানসিক চাপ ও ধূমপাম, মদ্যপান :- বর্তমান সময়ে দেখা গিয়েছে, বীর্যহীনতার অন্যতম কারণ প্রচণ্ড কাজের চাপ, মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা, অনিদ্রা, ধূমপান ও মদ্যপান। তবে চিকিত্‍সকরা জানাচ্ছেন, মানসিক রোগ, যেমন অবসাদ, উদ্বেগ কমানোর আধুনিক চিকিত্‍সায় এই ধরনের সমস্যার সমাধান হয়ে যাচ্ছে।

No comments:

Post a Comment