আপনার ছবি দিয়েই ফেসবুকে ‘ভিডিও ভাইরাস’

সম্প্রতি ফেসবুকে যুক্ত হয়েছে এক নতুন ভাইরাস। অনেকে বুঝে না বুঝে কিংবা স্রেফ কৌতূহলের বশে ভিডিওটির লিংকে ক্লিক করে ফাঁদে পড়ছেন।
এর ফলে অনেকেই তাদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হারাচ্ছেন। স্প্যামটি মূলত ভিডিও লিংকের মাধ্যমে ছড়ায়।
তাই এসব ভিডিও ভাইরাসের স্ক্রিনশটসামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কোনও ভিডিও লিংক ঘুরে বেড়ালে কিংবা ইনবক্সে কেউ কোনও ভিডিও লিংক পাঠালে সেসবে ক্লিক না করার পরামর্শ দিয়েছেন তথ্যপ্রযুক্তি সংশ্লিষ্টরা।
যারা ফেসবুকে স্প্যামটির আক্রমণের শিকার হবেন, তাদের কাছ থেকে বন্ধুতালিকায় থাকা সদস্যদের কাছে একটি ভিডিও লিংক যাবে। এটা দেখতে অনেকটা ইউটিউব ভিডিও লিংকের মতো। এই লিংকটি যার কাছে যাবে তার নিজের প্রোফাইলের ছবি এতে সংযুক্ত থাকবে। ফলে সহজাতভাবেই তিনি ভাবতে পারেন এটা তার সম্পর্কিত কোনও ভিডিও। আর এই ভেবে যখনই কৌতূহল নিয়ে তিনি এতে ক্লিক করবেন তখন তিনি নিজেও স্প্যামটি দিয়ে আক্রান্ত হবেন। পরবর্তী সময়ে তার অ্যাকাউন্টের বন্ধু তালিকায় থাকা সবার ইনবক্সে এমন লিংক যাবে।
ইন্টারনেট ঘেঁটে জানা গেল, স্প্যাম হছে অনাকাঙ্ক্ষিত মেসেজ যা সাধারণত ই-মেইলের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর কাছে পাঠানে হয়। স্প্যামের মাধ্যমে কমদামি পণ্য বা সেবার বিজ্ঞাপন যেমন বিভিন্ন ধরনের ঋণ, দ্রততম সময়ে বড়লোক হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ, অর্থ উপার্জনের উপায়, লটারিসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য বিজ্ঞাপন ইত্যাদি পাঠানো হয়। অনেক সময় বিভিন্ন নিউজ গ্রুপ বা বুলেটিনবোর্ডে অপ্রাসঙ্গিক পোস্টকেও স্প্যাম বলা হয়।
স্প্যাম সাধারণ মেইলের মতোই আপনার ইনবক্সে আসে। স্প্যামিং-এর মূল উদ্দেশ্য হলো বিনা পয়সায় পণ্যের প্রচার। স্প্যামগুলোর মাধ্যমে আপনার ‘প্রাইভেসি’ও হুমকির মুখে পড়তে পারে। স্প্যাম যারা পাঠায় তারা হলো স্প্যামার। এই স্প্যামাররা ইন্টারনেট থেকে এবং র্যাান্ডমলি বিভিন্ন ইমেল অ্যাড্রেস জেনারেট করে স্ম্যাম মেইল পাঠিয়ে থাকে। এবার এসবই আরও জাটিল আকারে ভর করেছে ফেসবুকে।
এভাবেই ক্রমশ বিস্তার লাভ করছে এই স্প্যাম। গত কয়েকদিনে যেটা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। এ সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া ইসলাম রুম্পা বলেন, ‘আমার অনেক বন্ধু এই স্প্যামের শিকার হয়েছে। আমার কাছেও অনেকবার স্প্যামটির লিংক এসেছে। কিন্তু সেগুলোতে ক্লিক না করায় আমার অ্যাকাউন্টের কোনও সমস্যা হয়নি।’
স্প্যামে আক্রান্ত হলে করণীয়:
১. দ্রুত পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে ফেলা।
২. কিছু সময়ের জন্য ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি ডিঅ্যাক্টিভেট করে রাখা। পরে সময় বুঝে চালু করা। অনেক সময় যার অ্যাকাউন্ট থেকে স্প্যামটি আসছে তাকে আনফ্রেন্ড করলেও এ থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। এছাড়া যদি ফেসবুকের সিকিউরিটি (ব্যবহারকারীর) ব্যবস্থা দুর্বল থাকে তাহলে অনেক সময় ফেসবুকই পরামর্শ দিয়ে থাকে ব্যবহারকারীকে কী করতে হবে। ব্যবহারকারীর ফায়ারওয়াল দুর্বল থাকলে সে মতো নির্দেশনা দেয় ফেসবুক। ওই নির্দেশনা মেনে চললে ওই স্প্যামের হাত থেকে মুক্তি মিলতে পারে। আরও নিশ্চিত হতে চাইলে যিনি ভিডিওটি পাঠিয়েছেন, তাকে ফোন করে বা ইনবক্স করে জেনে নিন ভিডিওটি তিনিই পাঠিয়েছেন কিনা। নিশ্চিত হয়েই তবে লিংক ওপেন করতে পারেন।

No comments:

Post a Comment