যে কথাগুলো সন্তানকে কখনোই বলা উচিত নয়

কাজের অনেক চাপে হয়তো আপনি আপনার সন্তানকে এমন ভুল কিছু কথা বলে থাকেন যা শুনে সে কষ্ট পায়, রেগে যায় বা দ্বিধান্বিত হয়। আপনি হয়তো বাচ্চার ভালোর জন্য তাকে বকা দিচ্ছেন, ভাবছেন একটু বকা দিলে তো কোনো ক্ষতি নেই।
এই একটু বকা আপনার বাচ্চার মনে খুব খারাপ প্রভাব ফেলছে। এটি তার ব্যক্তিত্বে অনেকখানি নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। শুধু ব্যক্তিত্বে নয় এটি আপনাদের সম্পর্কেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
চলুন জেনে নেয়া যাক, এমনই কিছু ভুলের কথা যা আপনার সন্তানকে কখনোই বলা উচিত নয়-
১। আমাকে একা থাকতে দাও: প্রতিটি মানুষের নিজস্ব কিছু সময় কাটানোর প্রয়োজন হয়। জীবনে এমন কোনো এক সময় আসে, যখন সবাই একা একা থাকতে চায়। কিন্তু তাই বলে সন্তানকে সরাসরি বলবেন না, 'আমাকে একা থাকতে দাও।' এটি তাদের মধ্যে নিরপত্তাহীনতা সৃষ্টি করে। সে মনে করে আপনি হয়তো আর তাকে ভালোবাসেন না।

২। তোমাকে দিয়ে কিছু হবে না: প্রতিটি মানুষের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আপনার সন্তানেও এর ব্যতিক্রম নয়। সব কাজ সে করতে পারবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। যদি কোন কাজে ব্যর্থ হয়, তার মানে এই নয় যে তার দ্বারা কোন কাজ হবে না। তাকে সান্ত্বনা দিন। তার সমস্যা খুঁজে বের করে সমাধান করুন।

৪। তোমার ভাই বা আপুর মত হতে পারো না: আপনার সন্তানকে তার ভাইবোন বা কাজিনের সঙ্গে তুলনা করবেন না। প্রতিটি সন্তানই স্বতন্ত্র। আপনার এইরূপ তুলনা তার ব্যক্তিত্বে প্রভাব ফেলে। নিজের ভেতর হীনমন্যতা সৃষ্টি হয়।

৫। থাম! না হলে তোমাকে মারব: এই কথাটি প্রায় সব বাবা মায়েরা তার সন্তানদের বলে থাকেন। আপনি সন্তানকে মারেন কিংবা না মারেন এই কথাটি তার মনে বিদ্রোহী মনোভাব সৃষ্টি করে। শুধু তাই নয় এটি বাচ্চাদেরকে জেদি করে তোলে।

৬। তুমি কোনো কাজ ঠিকমত করতে পারো না: একজন বাচ্চার ক্ষমতা সীমিত থাকে। সে সব কাজ নিখুঁত করার চেষ্টা করে। কিন্তু সবসময় তা পারফেক্ট নাও হতে পারে। তার মানে এই নয় যে, তাকে দিয়ে কোনো কাজ হবে না।

৭। তুমি খুব মোটা/শুকনো: কোনো শিশুকে তার স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলা উচিত নয়। এটি তার মধ্যে নিজের প্রতি ঘৃণা তৈরি করে। তার শরীরের গঠন নিয়ে কথা বলা থেকে বিরত থাকুন।

৮। তুমি না জন্মালে ভালো হতো: রাগ করে হোক অথবা অন্য যে কোনো কারণেই হোক সন্তানকে এই ধরণের কথা বলা থেকে বিরত থাকুন। এই একটি কথা আপনার প্রতি সন্তানের ঘৃণা তৈরির জন্য যথেষ্ট।

৯। তাড়াতাড়ি কর: আপনার সন্তানটি হয়তো সকালে নাস্তা খেতে খুব দেরি করে বা তার কেডস পরতে দেরি করে, যার ফলে তার স্কুলে যেতে দেরি হয়ে যায়। এর জন্য আপনি যদি তাকে শাস্তি দেন বা তাড়াতাড়ি কর কথাটি বারবার বলেন। এতে সে খুব বাড়তি চাপ অনুভব করবে, বেবি মাইন্ডস বইটির সহ লেখিকা (পি.এইচ.ডি) লিন্ডা অ্যাক্রিডোলো এমনটাই বলেন।

তাই আপনার কণ্ঠস্বর নরম করে বলুন, 'চলো তাড়াতাড়ি করি'। এতে সে বুঝতে পারবে যে আপনিও তার দলেই আছেন। কিংবা কোথাও যাওয়ার সময় দুজনে এক সঙ্গে রেডি হোন এবং বলুন 'চলো দেখি কে আগে তৈরি হতে পারে'। এতে সে জলদি কাজ শেষ করা শিখবে কোনো রকম মানসিক চাপ ছাড়াই।

প্রতিটি বাবা মা তার সন্তানকে ভালোবাসে। আপনিও তার ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু অনেক সময় আমরা এমন সব কথা বলে ফেলি যা সন্তানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই কিছুটা সাবধানতা অবলম্বন করে এই ধরণের কথা বলা থেকে বিরত থাকুন।

No comments:

Post a Comment