মাটির নিচে মিলছে ট্রেন ভর্তি সোনা

নাৎসি বাহিনীর সোনাভর্তি ট্রেনের খোঁজে পোল্যান্ডে ফের শুরু হলো খননকাজ। দেশের উত্তর-পশ্চিমাংশের শহর ওয়ালব্রিচে সেই লুণ্ঠিত গুপ্তধনের খোঁজে শুরু হয়েছে খোঁড়াখুঁড়ি।
গত বছর দুই ব্যক্তি দাবি করেছিলেন, তারা নাকি মাটির নিচে চাপা পড়ে থাকা নাৎসি যুগের একটি ট্রেনের সন্ধান পেয়েছেন। সেই অনুযায়ী গত ডিসেম্বরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা হলেও কোনো প্রমাণ মেলেনি। তারপর মঙ্গলবার থেকে শুরু নতুন করে শুরু হয়েছে ‘গুপ্তধনের সন্ধান’। যদিও, এই ট্রেনের অস্তিত্বের কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।
গত বছরের আগস্টে পোল্যান্ডের নাগরিক পিয়োট কোপার ও এক জার্মান অ্যান্ড্রু রিকটার দাবি করেছিলেন, তারা মোট ৯৮ মিটার লম্বা কয়েকটি কামরার (ট্রেনের) হদিশ পেয়েছেন। যেগুলো মাত্র আট থেকে নয় মিটার নিচে পোঁতা রয়েছে। ‘গ্রাউন্ড পেনেট্রেটিং’ রেডার মারফৎ তাঁরা বিষয়টি জানতে পেরেছিলেন বলে দাবি করেছিলেন ওই দুই ব্যক্তি। এহেন দাবির পরেই বিশ্বব্যাপী সংবাদমাধমে শোরগোল পড়ে যায়। কোপারা আরও দাবি করেছিলেন, ট্রেনের ওই কামরাগুলোতে অস্ত্রবোঝাই রয়েছে।
যদিও স্থানীয়রা জানিয়েছিলেন, ট্রেনে নাৎসি বাহিনীর লুট করা সোনা ও বিভিন্ন মূল্যবান রত্ন রয়েছে। তবে, এই দাবির কোনো ভিত্তি পাওয়া যায়নি। এমনকি, ক্রাকৌয়ের প্রখ্যাত এজিএইচ ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিও গত ডিসেম্বরে ওয়ালব্রিচে পরীক্ষা চালিয়ে ট্রেনের কোনও প্রমাণ পায়নি।
প্রফেসর জানুজ মাদেজ বলেছিলেন, আমি ১০০ শতাংশ নিশ্চিত যে মাটির নিচে কোনো ট্রেন নেই। তবে, টানেল বা সুড়ঙ্গ থাকতে পারে।
কিন্তু, মঙ্গলবার থেকে ওয়ালব্রিচে নতুন করে খোঁড়াখুঁড়ির প্রাথমিক কাজ শুরু করেছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। যদিও, উৎসাহ নিরসনের মতো তেমন কোনো কাজ এখন পর্যন্ত এগোয়নি। প্রকল্পের মুখপাত্র আন্দ্রেজ গাইক বলেছেন, খড়ের মধ্যে সূচ খোঁজার মতো এটা কোনো বিষয় নয়। যদি, সেখানে থাকে তা পাওয়া যাবে। তিনি আরো বলেছেন, খনন প্রক্রিয়ায় যদি সুড়ঙ্গ মেলে তাহলেও সাফল্য। সেই সুড়ঙ্গের মধ্যে ট্রেন থাকতে পারে না।
এদিকে যখন খননকাজ শুরু হয়েছে, তখন কোপার বলেছেন, আশা করি এক সপ্তাহের মধ্যে ফল পেয়ে যাব। আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে সব ধোঁয়াশা কেটে যাবে বলে পোল্যান্ডের সরকারি সংবাদমাধ্যম টিভিপি’কে জানিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে, গাইক জানিয়েছেন, আমরা ওয়ালব্রিচের বিভিন্ন এলাকায় পুরনো রেলপথ বরাবর ১০০ মিটার চওড়া ও ছয় মিটার গভীর গর্ত খুঁড়ব।
জানা যায়, নাৎসি বাহিনী নাকি ওয়ালব্রিচে সুড়ঙ্গ খুঁড়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সেই পথে জার্মানরা সোনা লুটের চেষ্টা করেছিলেন। যদিও, রাশিয়ার রেড আর্মি ভণ্ডুল করে দিয়েছিল এবং বন্ধ করে দিয়েছিল সেই সুড়ঙ্গ।

No comments:

Post a Comment