মহাকাশ থেকে সৌর বিদ্যুৎ সংগ্রহ করে তা পৃথিবীতে পাঠানোর প্রকল্প

 সূর্যরশ্মি দিয়ে মহাকাশে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে পৃথিবীতে আগামী ৩০ বছরের মধ্যে সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব উপায়ে ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। সম্প্রতি ওয়াশিংটনে ন্যাশনাল স্পেস সোসাইটি এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানিয়েছে। এ বিষয়ে গবেষণা পরিচালনা করেছেন ইন্টারন্যাশনাল একাডেমি অফ অ্যাস্ট্রোনটিকসের একদল বিজ্ঞানী।
প্রকল্পটি এখনো গবেষণাগারে রয়েছে। তবে প্রসত্মাবিত প্রকল্পটি ‘প্রযুক্তিগতভাবে সম্ভব’ বলে গবেষকরা জানিয়েছেন। তারা জানান, গবেষণাগারের বর্তমান প্রযুক্তিতে কক্ষপথে এমন বিদ্যুৎ প্রকল্প বসানো সম্ভব যাতে করে আগামী এক বা দুই দশকের মধ্যে সৌরশক্তি সংগ্রহ করে তা পৃথিবীতে পাঠানো যায়। তবে এ প্রকল্পের জন্য গবেষকরা কোন রোডম্যাপ দেননি। গবেষণার নেতৃত্ব দিয়েছেন নাসার বিশেষজ্ঞ ও মার্কিন মহাকাশ সংস্থার সাবেক প্রধান কনসেপস জন ম্যানকিনস।
তিনি বলেছেন, এ বিষয়টি স্পষ্ট যে ২১ শতকে বৈশ্বিক বিদ্যুতের চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে মহাকাশ থেকে সরবরাহ করা সৌরশক্তি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। গবেষণায় বলা হয়, মহাকাশ সৌরশক্তি নামের নতুন এ ধারণাকে বাজারজাত করতে প্রয়োজন সরকারি অর্থায়ন। কারণ এ প্রকল্পটি দীর্ঘমেয়াদি এবং ‘অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার’ মুখোমুখি হতে পারে। তাই শুধু বেসরকারি খাতের পক্ষে প্রকল্পটি চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নাও হতে পারে। তবে প্রকল্পটি বাসত্মবায়নে কী পরিমাণ খরচ হতে পারে তা নিয়ে গবেষণা প্রতিবেদনে কিছু বলা হয়নি। ন্যাশনাল স্পেস সোসাইটির মতে, মহাকাশ সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প পরিবেশগতভাবে নিরাপদ এবং দীর্ঘমেয়াদি বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধানে সহায়ক।
প্রসত্মাবিত প্রকল্প অনুযায়ী, বিষুব রেখার ওপর জিওসিনক্রোনাস কক্ষপথে পর্যায়ক্রমে একের পর এক বেশকিছু সৌরশক্তি-চালিত কৃত্রিম উপগ্রহ স্থাপন করা হবে। এ উপগ্রহগুলোর একটি থেকে অন্যটির দূরত্ব হবে কয়েক কিলোমিটার। এ উপগ্রহগুলো দৈনিক ২৪ ঘণ্টা পর্যমত্ম সূর্যের আলো সংগহ করতে পারবে। এরপর সূর্যের আলো থেকে সংগৃহীত তাপশক্তিকে বিদ্যুৎশক্তিতে রূপামত্মর করে মাইক্রোওয়েভ ট্রান্সমিটিং অ্যান্টেনা ও লেজারের মাধ্যমে পৃথিবীর যেখানে প্রয়োজন সেখানে পাঠানো হবে।

No comments:

Post a Comment