ব্ল্যাক হোল নেই, বিগ ব্যাং তত্ত্ব ভুল !

বর্তমান বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ড যে তত্ত্বের উপর দাঁড়িয়ে আছে, সেই বিগ ব্যাং বা মহা বিস্ফোরণ তত্ত্ব যদি ভুল হয়, কেমন ঠেকবে বলুন তো?
কোনো এক সকালে উঠে যদি শুনতে হয়, ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণ গহ্বর বলে কিছু নেই, তাহলে বিজ্ঞানীদের মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই! 

অনেকটা সেরকমই ঘটেছে। সম্প্রতি এক বিজ্ঞানী দাবি করেছেন, ব্ল্যাক হোলের অস্তিত্ব থাকা অসম্ভব। এই দাবির গাণিতিক প্রমাণও নাকি তার কাছে আছে। 

বিজ্ঞান পাড়ায় এর মধ্যেই হুলস্থুল পড়ে গেছে। আর হুলস্থুল ফেলে দেওয়া বিজ্ঞানীর নাম লরা মারসিনি-হফটন। তিনি ইউনিভার্সিটি অব নর্থ ক্যারেলিনার একজন বিজ্ঞানী।  তার দাবি যদি সত্যি হয়, তাহলে পদার্থ বিজ্ঞানসহ বিজ্ঞানের অনেক তত্ত্বের ব্যাপারে নতুন করে ভাবতে হবে বিজ্ঞানীদের। 

তিনি বলছেন, মৃত নক্ষত্র থেকে এক ধরনের রেডিয়েশন বা বিকিরণ নির্গত হয়। এছাড়া নক্ষত্র এত বেশি রেডিয়েশন দিয়ে ঘেরা থাকে যে, ব্ল্যাক হোল তৈরি হওয়ার মতো অবশিষ্ট ঘনত্ব থাকে না।   


স্টিফেন হকিং সর্বপ্রথম নক্ষত্রের রেডিয়েশন সম্পর্কে ধারণা দেন। এজন্য তার নামানুসারে একে হকিং রেডিয়েশন বলা হয়।  ব্ল্যাক হোল গঠনের আগে মৃত নক্ষত্রগুলো একইসাথে স্ফীত এবং বিস্ফোরিত হয়।

এজন্য ব্ল্যাক হোল গঠনের অবস্থায় যাওয়া সম্ভব না, যোগ করেন অধ্যাপক লরা।   তবে মহাবিশ্বে ব্ল্যাক হোলের অস্তিত্ব আছে কী নেই, এর বস্তগত প্রমাণ পেতে আরও বেশকিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে। আপাতত পরীক্ষামূলক প্রমাণের জন্য তিনি একটি গাণিতিক ব্যাখ্যা দাঁড় করিয়েছেন বলে দাবি করছেন।
এ বিষয়ে তার বক্তব্য, ব্ল্যাক হোল সমস্যা সমাধানে আমরা প্রায় ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে গবেষণা করছি। এই সমাধান আমাদের অনেককিছু ভাবার সুযোগ করে দিয়েছে। 
অধ্যাপক লরার এই তত্ত্ব যদি ঠিক হয় অর্থাৎ মহাবিশ্বে ব্ল্যাক হোলের অস্তিত্ব যদি নাই থাকে, তাহলে হকিংয়ের বিখ্যাত বিগ ব্যাং তত্ত্বের সত্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠে যাবে।

সহজে বললে, বিগ ব্যাং হলো একটি মহাবিস্ফোরণ। ধরে নেয়া হয়, মহাবিশ্ব তথা গ্রহ-নক্ষত্র একটি কণার বিস্ফোরণ থেকে সৃষ্টি হয়েছে। বিস্ফোরণের মূহুর্ত থেকেই সময়ের শুরু। বিগ ব্যাংয়ের এই তত্ত্বটি দেন বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং। এ বিষয়ে তিনি ‘ব্রিফ হিস্টোরি অব টাইম: ফ্রম বিগ ব্যাং টু ব্লাক হোল’ নামে একটি বই লেখেন।

No comments:

Post a Comment