উইন্ডোজ ১০ এর কিছু অসাধারন ফিচার !

 

বিশ্বের জনপ্রিয়তম অপারেটিং সিস্টেম (ওএস) মাইক্রোসফট উইন্ডোজের নতুন সংস্করণ ‘উইন্ডোজ ১০’ বাজারে ছাড়া হয়েছে গত ২৯ জুলাই। উইন্ডোজ ১০ প্রকাশের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য হলো এমন একটি অপারেটিং সিস্টেম তৈরি করা, যা ডেস্কটপ কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, স্মার্টফোন, ট্যাবলেট কম্পিউটার, এক্সবক্সসহ সম্প্রতি বাজারে আসা
সারফেস হাব এবং হলো লেন্সের মতো যন্ত্রে ব্যবহার করা যাবে। অ্যাপের জন্যও ব্যবহার করা হবে একটি একক অ্যাপ্লিকেশন স্টোর, যেখানে সব যন্ত্রের উপযোগী অ্যাপ পাওয়া যাবে।
মূল বৈশিষ্ট্য
সব যন্ত্রের জন্য এক ওএস—এটা উইন্ডোজ ১০-এর মূল বৈশিষ্ট্য। প্রয়োজন ও কাজের ধরন অনুযায়ী একেক যন্ত্র একেক রকম। সব যন্ত্রেই যেন একই ধরনের উইন্ডোজ ব্যবহার করা যায় সে জন্য প্রথম প্রকাশ করা হয়েছিল উইন্ডোজ ৮। এরই ধারাবাহিকতায় উইন্ডোজ ১০, তবে আরও নতুন রূপে এবং আরও বেশি কার্যকর হয়ে।
টাচস্ক্রিন সুবিধার কোনো ল্যাপটপ থেকে যখন উইন্ডোজ ১০ ব্যবহার করা হবে, তখন ইচ্ছা হলে উইন্ডোজের ট্যাব মোড চালু করে নেওয়া যাবে। আবার কোনো ট্যাব বা মোবাইলে বাড়তি কি-বোর্ড ও মাউস যোগ করে উইন্ডোজের ডেস্কটপ মোড ব্যবহার করা যাবে। অর্থাৎ ব্যবহারকারীরা তাদের দরকার অনুযায়ী উইন্ডোজের ইন্টারফেস পরিবর্তন করতে পারবে।
 আবার স্টার্ট বাটন
উইন্ডোজ ১০-এ আবার ফিরিয়ে আনা হয়েছে স্টার্ট বাটন। উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের একেবারে শুরু থেকে এটি ব্যবহার করা হলেও উইন্ডোজ ৮-এ মেট্রো নামের একটি নতুন ডিজাইন ধারণা চালু হয়েছিল। তাই স্টার্ট মেনুর পরিবর্তে ছিল নতুন ধরনের একটি ব্যবস্থা। তবে এটি জনপ্রিয়তা পায়নি। তাই ফিরে এসেছে উইন্ডোজ স্টার্ট বাটন। একই সঙ্গে উইন্ডোজ ৭ ও ৮-এর সমন্বয় এবং আরও নতুন অনেক বৈশিষ্ট্য যোগ হয়েছে এতে।
স্টার্ট মেনু ফিরিয়ে আনার সঙ্গে সঙ্গে নতুন নকশার টাস্কবার হয়েছে উইন্ডোজ ডেস্কটপের অন্যতম প্রধান অংশ। সব কাজ এই টাস্কবারের মাধ্যমে করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ফোল্ডারভিত্তিক অ্যাপ্লিকেশন তালিকার বদলে মূল অনুসন্ধান বক্স থেকে সহজেই যেকোনো কিছু খুঁজে বের করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পাশাপাশি স্টার্ট মেনুতে পিন করে রাখার ব্যবস্থা তো থাকছেই।
 ভার্চুয়াল ডেস্কটপ
এই প্রথম উইন্ডোজে একাধিক ডেস্কটপ ব্যবহারের সুযোগ পাওয়া যাবে। একাধিক ডেস্কটপে খোলা অ্যাপ্লিকেশনগুলো আলাদাভাবে ব্যবহার করা যাবে। ডেস্কটপ পরিবর্তন করা, একটার অ্যাপ আরেক ডেস্কটপে স্থানান্তরের সুবিধা থাকছে। সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য এর তেমন প্রয়োজন পড়বে না। তবে বিভিন্ন ধরনের কাজ কারে থাকেন, এমন ব্যবহারকারীদের জন্য এটি বেশ কাজের

কর্টানা: ডিজিটাল সহকারী
কর্টানা নামের এক ডিজিটাল সহযোগীর আবির্ভাব ঘটেছে নতুন এই অপারেটিং সিস্টেমে। বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করার পাশাপাশি বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়ার কাজও করতে পারবে কর্টনা।
এক্সপ্লোরারের বদলে এজ
ওয়েবসাইট দেখার সফটওয়্যার ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারের বদলে মাইক্রোসফট এবার এনেছে এজ। আধুনিক ওয়েব ব্রাউজারের সব বৈশিষ্ট্য এতে থাকছে। পাশাপাশি এর সঙ্গে কর্টানার সংযোগও থাকছে।
 কেন্দ্রীয় নোটিফিকেশন ব্যবস্থা
 অ্যান্ড্রয়েড, আইওএস, লিনাক্সে অনেক আগে থেকে এই কেন্দ্রীয় নোটিফিকেশন সুবিধা থাকলেও উইন্ডোজ ১০-এ মাইক্রোসফট প্রথম এটা যোগ করেছে। এত দিন অন্যান্য অ্যাপ তাদের নিজ নিজ নোটিফিকেশন ব্যবস্থা ব্যবহার করলেও ধীরে ধীরে সব অ্যাপ্লিকেশনই এই পদ্ধতি ব্যবহার করবে। এখান থেকে বিভিন্ন অ্যাপের সব নোটিফিকেশন কেন্দ্রীয়ভাবে একটি সারিতে মূল নোটিফিকেশনের সঙ্গে দেখানো হবে।
নতুন নোটিফিকেশন ট্রে-তে এখন কাজের সুবিধার জন্য উইন্ডোজ সেটিংস, নোট, ভিপিএন ও লোকেশনের মতো প্রয়োজনীয় বিভিন্ন অ্যাপের লিংকও যোগ করা হয়েছে।
নিরাপত্তা: হ্যালো এবং পাসপোর্ট
উইন্ডোজ নিরাপত্তার জন্য বিশেষ বৈশিষ্ট্য যুক্ত করা হয়েছে এই উইন্ডো ১০-এ। একাধিক তথ্য নিশ্চিতকরণের (মাল্টিফ্যাক্ট অথেনটিকেশন) পাশাপাশি বায়োমেট্রিক অথেনটিকেশন-ব্যবস্থাও যোগ করা হয়েছে উইন্ডোজ হ্যালো এবং উইন্ডোজ পাসপোর্ট নামের এ নিরাপত্তাব্যবস্থায়। ব্যবহারকারীর চেহারা, চোখের আইরিশ ও আঙুলের ছাপ শনাক্ত করার যন্ত্র যোগ করে এই সুবিধাগুলো ব্যবহার করা যাবে। উইন্ডোজ পাসপোর্ট হলো এমন একটি ব্যবস্থা, যেটি ব্যবহারকারীকে নেটওয়ার্ক, সফটওয়্যার ও ওয়েবসাইট ব্যবহারের ক্ষেত্রে পিন অথবা বায়োমেট্রিক ব্যবস্থায় লগ-ইন করে ব্যবহার করতে দেবে।
অ্যাপলিকেশনের নতুন সংস্করণ
উইন্ডোজ ১০-এ এসে অপারেটিং সিস্টেমের প্রায় সব কটি অংশে পরিবর্তন করা হয়েছে। নতুন নতুন বৈশিষ্ট্য সংযোজন করা হয়েছে প্রায় প্রতিটি অ্যাপেই।
 অ্যারো স্ন্যাপ: ডেস্কটপ ব্যবস্থাপনার বিশেষ সুবিধা দেবে।
 স্নিপিং: উন্নত সংস্করণের এই স্নিপিং দিয়ে স্ক্রিনশট নেওয়ার কাজটি করা যাবে আগের চেয়ে সহজে।
 উইন্ডোজ কমান্ডলাইন: উইন্ডোজ ১০-এ কমান্ড লাইন টুলের একটি নতুন সংস্করণ যুক্ত করা হয়েছে, যেখানে কমান্ড কপি পেস্ট, নির্বাচন করার কাজগুলো সহজে করা যাবে।
নতুন কিছু শর্টকাট
উইন্ডোজ ১০-এর নতুন বৈশিষ্ট্যগুলো ব্যবহার করার জন্য রয়েছে নতুন নতুন শর্টকাট।
•Win+Tab: সব ভার্চুয়াল ডেস্কটপ একই সঙ্গে দেখা
•Win+Q বা Win+S: কর্টানা চালু করা
•Win+I: উইন্ডোজ ১০ সেটিংস খোলা
•Win+A: নোটিফিকেশন সেন্টার খোলা
•Win+Ctrl+D: নতুন ভার্চুয়াল ডেস্কটপ খোলা
•Win+Ctrl+F4: ভার্চুয়াল ডেস্কটপ বন্ধ করা
•Win+Ctrl+[Left/Right]: ভার্চুয়াল ডেস্কটপ পরিবর্তন করা

No comments:

Post a Comment