জুকারবার্গ- এর ফেসবুকের গল্প!

সোশ্যাল জগতের জীবনযাত্রায় ফেসবুক এনেছে এক বিশ্বায়ন। বাংলাদেশের প্রায় ২০% মানুষ আজ ফেসবুকের সাথে জড়িত। এই ফেসবুক জগতে ধনি-গরীব সকলেরই রয়েছে স্ট্যাটাস! সকলেরই রয়েছে লাইক পাওয়ার অধিকার…। বর্তমানে ফেসবুকে রয়েছে প্রায় ১.৩ বিলিয়ন মানুষ!
অতএব যেই ফেসবুকের এত চাহিদা তার বাজার দরও বিশাল! মাত্র ১০ বছরেই জুকারবার্গ ইনকাম করেছে প্রায় সাত বিলিয়ন আমেরিকান ডলার। যা বাংলা টাকায় প্রায় ৬০০ বিলিয়ন!
প্রতিদিনই প্রতি মুহুর্তে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ শেয়ার করেছে তাদের জীবনের গল্প, জীবনের অনেক অনুভূতি। আমরাও প্রতিদিন কম বেশী শেয়ার করি আমাদের নিজেদের অনুভূতি, নিজেদের গল্প। কিন্তু আজ আর এই নিজেদের নয় জেনে নিব ফেসবুকের গল্প, হাজারও বাঁধা পেরোনোর গল্প!
আজকের ফেসবুক জুকারবার্গ-এর স্বপ্ন এই অবস্থানে আসতে পারি দিতে হয়েছে হাজারও হাজারও বাঁধা, সংযত হতে হয়েছে হাজারও প্রলোভনে! ফেসবুকের শুরু থেকেই এসেছিল ফেসবুককে কেনার অনেকবার অফার। কিন্তু জুকারবার্গ কোনো প্রলোভনে পা দেননি। সর্ব প্রথম ২০০৪ সালে ফেসবুকের জন্মের চার মাসের মধ্যেই কেনার অফার আসে নিউ ইয়র্কের একটি কোম্পানির কাছে থেকে। আর জুকারবার্গের বয়স তখন মাত্র ২০ বছর। সেই সময়ই দশ লক্ষ মার্কিন ডলারে কিনতে চেয়েছিল ফেসবুককে সেই নিউ ইয়র্কের কোম্পানিটি। কিন্তু জুকারবার্গ সেই কোম্পানির আবেদনকে কোনো কর্ণপাত করেনি অথচ তখনও ফেসবুক ভাল ভাবে আয়ের মুখ দেখেনি।
২০০৭-এ ফ্রেন্ডস্টার ফেসবুক কেনবার পদক্ষেপ নিয়েছিল কিন্তু তাতেও কোন সাড়া দেইনি ফেসবুকের পিতা জুকারবার্গ। অতঃপর ২০০৪ তৃতীয় প্রলোভন আসে বিশ্ব ক্ষেত গুগল এর কাছ থেকে। গুগল অফার করেছিল ফেসবুকের সঙ্গে একসাথে কাজ করার। কিন্তু তাতেও লাভ হইনি, জুকারবার্গ-এর মন গলেনি। এবার দশ লক্ষ মার্কিন ডলারের ফেসবুক অফার পায় ৭৫ মিলিয়ন ডলারের! এই ৭৫ মিলিয়ন ডলারের ভয়াবহ অফার দেয় ভায়াকম নামক একটি প্রতিষ্ঠান!
জুকারবার্গ ৭৫ মিলিয়ন ডলারে তো বিক্রি করেনি নাই বরং মাইস্পেস সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কার্যনির্বাহী যখন ঐ সময়ই ফেসবুক কিনার ইচ্ছে নিয়ে জুকারবার্গ-এর অফিসে গিয়েছিলেন সেইসময় জুকারবার্গ দাম ফেসবুকের ফাম হাকিয়েছিলেন ৭৫০ মিলিয়ন ডলার! ২০০৬ সালে অনলাইন বিশ্বের অন্যতম রাজা ইয়াহু ফেসবুককে এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার অফার করে! কিন্তু জুকারবার্গ সেই একই সিদ্ধান্ত না! পরবর্তীকালে ফের ইয়াহু অফার দেয় ৮৫০ মিলিয়ন ডলার এবং এই সময় সিদ্ধান্ত নিতে দশ মিনিট সময় নিয়েছিল জুকারবার্গ।
পরবর্তিতে দুনিয়ার তাবড় তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি মাইক্রোসফ্ট, এওএল (AOL) সহ আরও অনেক নামিদামি কোম্পানি ফেসবুক কে কিনতে চেয়েছে কিন্তু জুকারবার্গ -এর বিশ্বাস ছিল সে পারবেই, ফেসবুক একদিন বড় হবেই হবে। পরবর্তিতে ২০০৮ , ২০০৯ এর পর আর ফেসবুক কে পিছে ফিরে তাকাতে হইনি। বর্তমান বিশ্বে জুকারবার্গ-এর ফেসবুক শুধুমাত্র সোশ্যাল ওয়ার্ল্ড-এর রাজত্ব নয় বরং প্রত্যক্ষ অপ্রত্যক্ষ ভাবে পৃথিবীর রাজত্ব করছে! শুধুমাত্র ছোট একটা প্রদক্ষেপের মাধ্যমে ধ্বংস করে দিতে পারে একটা দেশ, একটা জাঁতি!

No comments:

Post a Comment