গেমের জনপ্রিয় চরিত্র

 কম্পিউটার গেমে আসক্তি থাকুক বা না থাকুক, গেমের জনপ্রিয় সব চরিত্রের সঙ্গে কমবেশি সবারই পরিচয় আছে। মূল কারণ গেমের পর্দা থেকে এই চরিত্রগুলো কখনো বইয়ের পাতায়, আবার কখনো রুপালি পর্দায় ধরা দিয়ে মানুষের প্রশংসা কুড়িয়েছে। ভিডিও গেমের জগতটাই এমন যে দিন কয়েক পরপরই নতুন গেম প্রকাশ হয়। তবে মানুষের মনে দাগ কেটে থেকে যায় খুব কম। এখানে সেই জনপ্রিয় লারা ক্রফট থেকে প্রিন্স অব পার্সিয়া, অন্যদিকে মারিও থেকে পিকাচুর কথা লেখা হলো।
পিকাচু
ঠিক ৭২১টি পোকেমন চরিত্র আছে। জনপ্রিয়তার বিচারে ৭২০টি চরিত্রের একটিও পিকাচুর আশপাশে আসতে পারেনি। পিকাচু বেশ আদুরে। শুরুটা জাপানে। ছড়িয়ে পড়েছে সারা বিশ্বে। এরপর তৈরি অ্যানাইম ছবি। ধারাবাহিক কার্টুন প্রচার হয়েছে দীর্ঘদিন। সব ফরম্যাটেই মানুষের মনে ঠাঁই করে নিতে সময় লাগেনি একটুও।
 অ্যাংরি বার্ডস
মুক্তির পর থেকে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে স্মার্টফোনের গেম অ্যাংরি বার্ড। এই গেমের অনেক চরিত্র। তবে নামের সার্থকতা মেলে লাল অঙ্গের লাল নামের রেড বার্ড। দ্বীপের হাস্যোজ্জ্বল পাখিদের মধ্যে রেড বার্ড কিছুটা ব্যতিক্রম। তবে সেটাই তার বৈশিষ্ট্য। এর বাইরে আছে চাক, বম্ব, মাটিলডা, দ্য পিগস লিওনার্দো, মাইটি ইগল, টেরেন্স ও স্টেলা। দিন কয়েক আগে এই পাখিদের নিয়ে তৈরি হয়েছে অ্যানিমেশন ছবি, সেটাও হিট।
 লারা ক্রফট
শক্তপোক্ত চেহারার এক নারী। পরনে ময়লা কাপড়চোপড়। দেখেই বোঝা যায় লড়াকু। লড়াইয়ের অনুষঙ্গ হিসেবে আছে তির-ধনুক, সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্রও আছে। নাম লারা ক্রফট। এক গেমার একবার প্রশ্ন রেখেছিলেন, লারা ক্রফটের পরনের সেই পোশাকের পকেট কত বড়? গত ২০ বছরে যত অ্যাওয়ার্ড জিতেছে লারা ক্রফট চরিত্র, তা নিশ্চয় ওতে আঁটানো সম্ভব না! আর গেমারদের ভালোবাসার স্থান দিতে দরকার অন্তত এক সমুদ্র জায়গা। টম্ব রাইডার গেমে প্রথম দেখা যায় তাকে, এরপর সিরিজের অন্য গেমগুলোর প্রধান ভূমিকায় লারা ক্রফট মূলত কাল্পনিক এক চরিত্র। তবে বিশ্বব্যাপী স্বাধীনচেতা এক নারী চরিত্রের আদর্শের জায়গায় বসেছে সফলভাবে।
রয় ও কেন
 ঠাস ঠাস বাড়ি আর কিছুক্ষণ পরপর মুখে হতাশাসূচক শব্দ—পাড়ার ভিডিও গেম খেলার জায়গাগুলো থেকে কিছুদিন আগেও এমন শব্দ ভেসে আসত। সে গেমের জনপ্রিয় চরিত্র মোস্তফা হলেও স্ট্রিট ফাইটারে সবার পছন্দ ছিল হয় রয় না হয় কেন। আজকাল ভিডিও গেমের ঠাঁই হয়েছে কম্পিউটারের পর্দায়। রয় বা কেনের জনপ্রিয়তা কমেনি একটুও। এই দুই মার্শাল আর্টিস্ট অনেকটা ভাইয়ের মতো, গেমের পর্দায় আবার একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী। গেমের চরিত্রে তাদের সুদীর্ঘ ইতিহাস আছে, দুজনেই লড়াকু চরিত্রের আদর্শে পরিণত হয়েছে। সুস্থির প্রকৃতির রয় আর অশান্ত কেনের দেখা প্রথম মেলে ১৯৮৭ সালে প্রকাশিত স্ট্রিট ফাইটার সিরিজের প্রথম গেমে।
 প্রিন্স অব পার্সিয়া
প্রথম ১৯৮৯ সালে মুক্তি পাওয়া প্রিন্স অব পার্সিয়া গেমে তাকে দেখা যায়। গেমের কাহিনি অবলম্বনে বই বের হয়েছে, চলচ্চিত্র মুক্তি পেয়েছে। চরিত্রের নাম পার্সিয়ার রাজপুত্র হিসেবেই চিনেছে সবাই। তার আলাদা নামের প্রয়োজন হয়নি কখনো।
মারিও
জাপানি ভিডিও গেম নকশাকার শিগেরু মিয়ামোতোর হাতে নিনটেন্ডো গেমিং কনসোলের জন্য প্রথম মারিও চরিত্র তৈরি করা হয় ১৯৮১ সালে মুক্তি পাওয়া ডংকি কং গেমে। মানুষের কাছে মারিও আদর্শে পরিণত না হলেও খুব আদুরে চরিত্রে পরিণত হয়েছে। মিয়ামোতোর হাতে আরও তৈরি হয়েছে লুইগি ও লিংকের মতো জনপ্রিয় সব চরিত্র। মিয়ামোতো মূলত চেয়েছিলেন পাপায়, ব্লুটো ও অলিভ অয়েলের মতো কার্টুন চরিত্র নিয়ে গেম তৈরি করতে। তবে লাইসেন্স না পাওয়ায় মারিও, ডাংকি কং ও পলিনের মতো চরিত্রের অবতারণা করেন। ডাংকি কংয়ে মারিওর নাম ছিল জাম্প ম্যান। এরপর প্রায় ২০০ গেমে দেখা গেছে মারিওকে, জনপ্রিয়তা তাঁর একটুও কমেনি। বরং বেড়েছে। ছোট এক প্যারাগ্রাফে মারিওর বর্ণিল ইতিহাসের বর্ণনা তুলে ধরা সম্ভব নয়।

No comments:

Post a Comment